Thursday, November 17, 2016

‘আমার স্বামী জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করে। আমার অনেক রক্ত বের হয় ...’


‘আমার বিয়ে হয়েছে ৮ মে। প্রথম রাতে আমার পেইন হয়। তার জন্য আমি ওর সাথে কিছু করতে পারি না। তার পরের দিন আমার পিরিয়ড শুরু হয়। সাত দিন পর আবার শারীরিক সম্পর্ক করতে যাই। আমার অনেক রক্ত বের হয়। আমি ভয় পাই। তাই ডাক্তারের কাছে যাই। ডাক্তার এক সপ্তাহের মধ্যে কিছু করতে নিষেধ করে। কিন্তু আমার স্বামী কিছু শুনতে চায় না। আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। আমি যখন বললাম যে আমার পেইন হচ্ছে, তখন আমাকে অনেক কিছু মানে অনেক কথা শুনিয়েছে। এখন আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। আপু আমার অনেক ভয় লাগে। আমার সঙ্গে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করে। না করতে চাইলে গায়ে হাত তোলে। আপু এই চার মাসে জীবনে তাঁর প্রতি আমার সব ভালোবাসা শেষ হয়ে গিয়েছে। আমি কী করবো কিছুই বুঝতে পারছি না আপু। প্লিজ কিছু বলুন।’
প্রশ্নটি আমাদের ফেসবুক পেজে করেছেনঃ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন তরুণী।
উত্তর :দেখো আপু, এই সম্পর্ক নিয়ে দ্বিতীয়বার চিন্তা ভাবনা করার কোন অবকাশই নেই। তুমি যদিও তোমার কোন বয়স লেখোনি, কিন্তু আমি ধরেই নিচ্ছি তোমার বয়স অনেক কম। আর তোমার স্বামী নামের জানোয়ারটা তোমাকে গত ৪ মাস যাবত যেটা করে যাচ্ছে সেটা ধর্ষণ ছাড়া আর কিছুই না। হ্যাঁ, তোমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তোমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক অতি অবশ্যই ধর্ষণ। সেটা যদি স্বামী করে, তাহলেও। স্বামী বলেই তোমার শরীরের ওপরে সে যা ইচ্ছা তাই করার অধিকার পেয়ে যায় না। অনুমতি ছাড়া শারীরিক সম্পর্ক, তোমাকে নির্যাতন করে শারীরিক সম্পর্ক, করতে না পারলে মারধোর এই সবই এক কথায় পাশবিক অত্যাচার। যে লোক মাত্র ৪ মাসেই তোমার সাথে এইসব করে ফেলেছে, এই মানুষের সাথে আর যাই হোক কোনভাবেই তুমি সুখী হতে পারবে না।
অবিলম্বে নিজের মা-বোন-পরিবারের কাছে বিষয়টি খুলে বলো ও স্বামীকে ডিভোর্স দেয়ার ব্যবস্থা করো। কোনভাবেই কারো বোঝানোতে কান দিবে না আপু। এই ধরণের জানোয়ার কখনো ভালো হয় না। এই জানোয়ারের সাথে ঘর করলে আজীবন তুমি একটা সেক্সটয় হয়েই থেকে যাবে। পরিবার যদি ডিভোর্সে রাজি না হয়, তাহলে কোন মহিলা সংস্থার (যেমন মহিলা পরিষদ), পারিবারিক আইন ও সালিশ কেন্দ্র ইত্যাদির সাহায্য নাও এবং নিজেই তালাকের ব্যবস্থা করো। লোকটা ঝামেলা করলে নারী নির্যাতন মামলা করে দাও। ভয়ের কিছুই নেই। তুমি নিজেই চাইলে এই লোককে তালাক দিতে পারবে, এবং কেউ তোমাকে সংসার করার জন্য বাধ্য করতে পারবে না।
একটা জিনিস মনে রাখবে আপু, এই সম্পর্ক নিয়ে যদি সমঝোতা করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করো, তাহলে দিন দিন কেবল তোমাদের সমস্যা বাড়বেই। এই সমস্যার আর শেষ হবে না। তোমার যন্ত্রণার আর শেষ হবে না। এটা থেকে বের হয়ে নতুন ভাবে বেঁচে থাকা তোমাকে শিখতেই হবে। এই কারাগার তোমাকেই ভাঙতে হবে।
পরামর্শ দিয়েছেন-রুমানা বৈশাখী

No comments:

Post a Comment